Wednesday, August 6, 2025

শ্রাবন্তীর রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন? বেহালা পশ্চিমে নতুন ইতিহাসের অপেক্ষা?

শহীদ দিবসের মঞ্চে তার উপস্থিতি থেকেই রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে জোর জল্পনার সূচনা। টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের ফের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহল।

গত ২১ জুলাই, কলকাতার শহীদ মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় শ্রাবন্তীর উপস্থিতি চমকে দিয়েছে অনেককেই। যেখানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও উঠে আসে তার নাম। অভিনেত্রীর ওই সভায় উপস্থিতি ঘিরেই শুরু হয়েছে প্রশ্ন—তাহলে কি ফের রাজনীতির ময়দানে নামতে চলেছেন শ্রাবন্তী? লক্ষ্য কি আবারও বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র?

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শ্রাবন্তী বিজেপির টিকিটে বেহালা পশ্চিম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যদিও ভোটের ময়দানে হেরে যান তিনি। এরপর দলীয় রাজনীতির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তার। সোশ্যাল মিডিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি ছাড়ার ঘোষণাও করেন অভিনেত্রী।

কিন্তু আবারও যখন রাজ্যে ভোটের প্রস্তুতি শুরু, তার আগেই শ্রাবন্তীর শহীদ দিবসের মঞ্চে উপস্থিতি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, “মানুষের পাশে থাকাই আসল পূজা। যতটা পারি, মানুষের পাশে থাকতে চাই।” এবং যোগ করেন, “আর যদি সেটা বেহালা পশ্চিম হয়, তাহলে তো বাড়ির কাছেই। নিজের ভিটে।”

এই মন্তব্যেই যেন স্পষ্ট ইঙ্গিত—রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের পথে শ্রাবন্তী? বিশেষ করে এমন সময়, যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের পর বেহালা পশ্চিম কার্যত নেতৃত্বহীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পরিষেবা ও উন্নয়নের অভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল চাইছে একটি ‘নতুন মুখ’ তুলে ধরতে। সেই জায়গায় শ্রাবন্তী হতে পারেন আদর্শ পছন্দ।

তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনও ঘোষণা না এলেও, তৃণমূলের অন্দরমহলে জোর আলোচনা চলছে। দলের কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, “আমি ওর ফ্যান। সিনেমা দেখার সুযোগ না হলেও বিজ্ঞাপনে দেখেই মুগ্ধ। বিধানসভায় এমন প্রাণবন্ত মানুষ দরকার।”

দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, “এটা সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত। যা কিছু হবে, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই হবে।”

নিজেও রাজনৈতিক বাস্তবতা বুঝে মন্তব্য করছেন শ্রাবন্তী। তার কথায়, “ভবিষ্যৎ কেউ বলতে পারে না। রাজনীতি এত সোজা নয়। কীভাবে মানুষের পাশে থাকতে হয়, কাজ করতে হয়, সেটা শিখতে হবে।” তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, আগের থেকে অনেক বেশি পরিণত ও বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামনে আসছেন তিনি।

রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা কম হলেও, শ্রাবন্তীর রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও জনসংযোগ। তা যদি সঠিক কৌশলে ব্যবহার করা যায়, তবে ভোটের ময়দানে তা তৃণমূলের পক্ষে বড় সুবিধা হতে পারে।

সবমিলিয়ে, তৃণমূল যদি শ্রাবন্তীকে প্রার্থী করে, তবে তা নিঃসন্দেহে হবে এক সাহসী এবং কৌশলী সিদ্ধান্ত। আর তা হলে বেহালা পশ্চিমের মাটিতে শুরু হবে নতুন লড়াই—যেখানে পুরোনো অধ্যায়ের ইতি টেনে লেখা হবে নতুন ইতিহাস।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.