২০২৪ সালে মুম্বাইয়ে এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সালমানের নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই বাবা সিদ্দিকিকে টার্গেট করা হয়েছিল। এই ঘটনার পর মুম্বাই পুলিশ আর কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। সালমানের বান্দ্রার গ্যালাক্সি আবাসনের দোতলার এক কামরার ফ্ল্যাটে রয়েছে একটি বড় বারান্দা, যা তাঁর অনুরাগীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ। আগে এই বারান্দা পর্দা দিয়ে ঘেরা থাকত, যেখান থেকে সালমান জন্মদিন বা ঈদের শুভেচ্ছা জানাতেন। কিন্তু এখন বারান্দাটি বুলেটপ্রুফ কাচ দিয়ে পুরোপুরি ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
এক সূত্র জানায়, লরেন্স বিশ্নোইয়ের গ্যাংয়ের বারবার হুমকি এবং বাবা সিদ্দিকির হত্যার ঘটনার পর এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত বছর সালমান একটি বুলেটপ্রুফ নিসান প্যাট্রল এসইউভি গাড়ি কিনেছেন, যার মূল্য প্রায় ২ কোটি রুপি। এছাড়া তাঁর সঙ্গে সবসময় প্রায় ৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী থাকেন। মুম্বাই পুলিশ সালমানের বাসভবনের বাইরে উন্নত এআই-চালিত ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তিযুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে এবং তাঁকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে।
তবে সালমানের বক্তব্য অন্যরকম। তিনি বলেন, “ফ্ল্যাটের উচ্চতা কম হওয়ায় অনেক অনুরাগী পাইপ বেয়ে বারান্দায় উঠে পড়েন। কখনো দেখেছি অচেনা ব্যক্তি বারান্দায় ঘুমিয়ে আছেন। অনুরাগীদের কারণেই বারান্দা ঘিরতে হয়েছে।” যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যবস্থা মূলত লরেন্স বিশ্নোইয়ের হুমকির কারণে নেওয়া হয়েছে।
১৯৯৮ সালে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের সময় কালো হরিণ শিকারের অভিযোগে সালমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়, যা বিশ্নোই সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র। এই ঘটনা থেকেই লরেন্স বিশ্নোইয়ের গ্যাংয়ের সঙ্গে সালমানের বিরোধের সূত্রপাত। গত এপ্রিলে সালমানের বান্দ্রার বাসভবনের সামনে গুলি চালানোর ঘটনা এবং অক্টোবরে বাবা সিদ্দিকির হত্যার জন্য পুলিশ লরেন্স বিশ্নোইয়ের গ্যাংকেই দায়ী করছে। সম্প্রতি সালমানের ‘সিকান্দার’ ছবির শুটিং সেটেও এক ব্যক্তি লরেন্স বিশ্নোইয়ের নাম ব্যবহার করে হুমকি দিয়েছিলেন, যাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সালমানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তিনি বলেন, “ভগবান, আল্লাহ সবকিছু তাঁর হাতে। আমি যতদিন বাঁচার কথা, ততদিন বাঁচব। তবে এখন দুজন নিরাপত্তাকর্মী সঙ্গে থাকায় চলাফেরায় কিছুটা অসুবিধা হয়।”