Tuesday, July 22, 2025

‘দ্য কসবি শো’র তারকা ম্যালকম-জামাল ওয়ার্নারের মৃত্যু: কোস্টারিকায় সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে প্রাণ হারালেন ৫৪ বছর বয়সী অভিনেতা

 মার্কিন অভিনেতা ম্যালকম-জামাল ওয়ার্নার মারা গেছেন। কোস্টারিকায় পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে সমুদ্রে সাঁতার কাটার সময় প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। ‘দ্য কসবি শো’-তে থিওডোর হাক্সটেবল চরিত্রে অভিনয় করে কৈশোরেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ওয়ার্নার।

কোস্টারিকার জুডিশিয়াল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার (২০ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ২:৩০ নাগাদ ক্যারিবীয় উপকূলের লিমোন প্রদেশের প্লায়া গ্রান্দে কোক্লেস সমুদ্রসৈকতে সাঁতার কাটছিলেন ওয়ার্নার। হঠাত প্রবল স্রোতে গভীর সমুদ্রের দিকে ভেসে যান তিনি। সৈকতে উপস্থিত লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসলেও কোস্টারিকার রেড ক্রসের প্রাথমিক চিকিতসাকর্মীরা তাঁর শরীরে জীবনের কোনো লক্ষণ পাননি। পরে তাঁকে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিউ জার্সির জার্সি সিটিতে ১৯৭০ সালের ১৮ আগস্ট জন্মগ্রহণ করা ওয়ার্নার মাত্র ৯ বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর মা পামেলা ওয়ার্নার তাঁর প্রথম ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ‘ম্যাট হাউস্টন’ এবং ‘ফেম’ টিভি শো-তে অভিনয় করেন। ১৩ বছর বয়সে ‘দ্য কসবি শো’-তে বিল কসবি ও ফিলিসিয়া রাশাদের চরিত্র হিথক্লিফ ও ক্লেয়ার হাক্সটেবলের একমাত্র ছেলে থিওডোর হাক্সটেবলের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পান। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সম্প্রচারিত এই সিরিজটি আমেরিকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং কৃষ্ণাঙ্গ মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনযাত্রার ইতিবাচক চিত্রায়নের জন্য প্রশংসিত হয়।

ওয়ার্নারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিল কসবি বলেন, “খবরটা শুনে আমি বাক্‌রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তাঁর মায়ের কথা মনে পড়ল, যিনি তাঁর জন্য কত কষ্ট করেছেন এবং অসাধারণভাবে তাঁকে বড় করেছেন।” তিনি আরও বলেন, এই মৃত্যু তাঁর নিজের ছেলে এনিসের হত্যার স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে, যিনি ১৯৯৭ সালে একটি ডাকাতির ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন।

‘দ্য কসবি শো’-এর প্রভাব নিয়ে ওয়ার্নার ২০২৩ সালে বলেছিলেন, “শো-টি কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের জন্য কৃষ্ণাঙ্গ মধ্যবিত্তের জীবনকে বৈধতা দিয়েছে। শো প্রচারের শুরুতে অনেকে বলত, হাক্সটেবল পরিবার বাস্তবে নেই, কৃষ্ণাঙ্গরা এভাবে বাস করে না। কিন্তু আমরা হাজার হাজার চিঠি পেতাম, যেখানে মানুষ এই শো-এর জন্য ধন্যবাদ জানাত।” তিনি ১৯৮৬ সালে এই শো-এর পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ডে মনোনয়ন পান।

‘দ্য কসবি শো’-এর পর ওয়ার্নার ‘ম্যালকম অ্যান্ড এডি’ (১৯৯৬-২০০০), ‘রিড বিটুইন দ্য লাইনস’ (২০১১-২০১৫), এবং ‘দ্য রেসিডেন্ট’ (২০১৮-২০২৩) সিরিজে অভিনয় করেন। তিনি ‘ফুলস গোল্ড’ (২০০৮) এবং ‘ড্রপ জোন’ (১৯৯৪) চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি ‘দ্য কসবি শো’, ‘ফ্রেশ প্রিন্স অফ বেল-এয়ার’, এবং ‘কিনান অ্যান্ড কেল’-এর পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ২০১৫ সালে তিনি রবার্ট গ্লাসপার এক্সপেরিমেন্ট এবং লালাহ হ্যাথওয়ের সঙ্গে ‘জেসাস চিলড্রেন অফ আমেরিকা’ গানের জন্য গ্র্যামি পুরস্কার জিতেন।

ওয়ার্নারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সহশিল্পী ট্রেসি এলিস রস ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “তুমি আমার প্রথম টিভি স্বামী ছিলে। তুমি উষ্ণ, ভদ্র, উপস্থিত, দয়ালু, চিন্তাশীল, মজার এবং মার্জিত ছিলে। তুমি পৃথিবীকে উজ্জ্বল করেছ।” এডি গ্রিফিনও বলেন, “তোমার সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য সম্মানের ছিল। তুমি চিরকাল আমার হৃদয়ে থাকবে।”


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.