Sunday, September 7, 2025

পাঁচ বছর পর দেশে ফিরলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শাবানা

ঢালিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবারও দেশে ফিরেছেন। প্রায় দুই দশক আগে অভিনয় থেকে বিদায় নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তবে দেশের প্রতি টান এবং মায়ার বন্ধনে মাঝেমধ্যে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এবারও পাঁচ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর তিনি ঢাকায় ফিরেছেন এবং রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাড়িতে উঠেছেন। তবে গণমাধ্যমের আলো থেকে নিজেকে অন্তরালে রেখেছেন এই তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

শাবানার অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল ষাটের দশকে। ১৯৬২ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে পরিচালক এহতেশামের ‘নতুন সুর’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিষেক ঘটে। এরপর ১৯৬৭ সালে একই পরিচালকের ‘চকোরী’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে পাকিস্তানি অভিনেতা নাদিমের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এই সিনেমার মাধ্যমেই আফরোজা সুলতানা রত্না ‘শাবানা’ নামে পরিচিতি পান, যে নামটি তাকে দিয়েছিলেন পরিচালক এহতেশাম। তার অভিনয় জীবন তিন দশক ধরে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মন জয় করে। ৩৬ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৯৭ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় শাবানা হঠাৎ অভিনয় থেকে বিদায় নেন। ২০০০ সালে তিনি স্বামী ওয়াহিদ সাদিক, সন্তান ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকে তিনি মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে ফিরলেও গত পাঁচ বছরে তার আগমন ঘটেনি।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে দেশে ফিরে তিনি জানিয়েছিলেন, সুযোগ পেলে আবারও সিনেমায় কাজ করতে আগ্রহী। তার স্বামী ওয়াহিদ সাদিকও বলেছিলেন, অনুকূল পরিবেশ পেলে তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনার কথা ভাবছেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি, এবং মনোকষ্টে তিনি পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান।

সম্প্রতি আবারও দেশে ফিরেছেন শাবানা। তিনি বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন, যেটি তার অনুপস্থিতিতে খালি পড়ে থাকে। তবে আগের মতোই তিনি গণমাধ্যম এড়িয়ে নিজেকে অন্তরালে রেখেছেন। তার এই নীরব প্রত্যাবর্তন সত্ত্বেও ভক্তদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

শাবানার অভিনয় জীবন শুধু জনপ্রিয়তাই নয়, অসংখ্য পুরস্কারও এনে দিয়েছে। ১৯৮০ সালে ‘সখি তুমি কার’ সিনেমার জন্য প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এরপর ‘দুই পয়সার আলতা’ (১৯৮২), ‘নাজমা’ (১৯৮৩), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪), ‘আপেক্ষা’ (১৯৮৭), ‘রাঙা ভাবী’ (১৯৮৯), ‘মরণের পরে’ (১৯৯০) এবং ‘অচেনা’ (১৯৯১) সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে আরও আটবার এই পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি প্রযোজক হিসেবেও একবার জাতীয় পুরস্কার পান। ২০১৫ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সোনালী যুগের এই জীবন্ত কিংবদন্তির প্রত্যাবর্তন ভক্তদের মনে নতুন আশা জাগিয়েছে। তবে তিনি আবারও অভিনয়ে ফিরবেন কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.