সেই সময় পুরো বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন সাফা কবির। তিনি সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্র আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি রুম্মান রশীদ খানের ‘বিহাইন্ড দ্য ফ্রেম’ পডকাস্টে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন এবং জানান, এই ধরনের খবর প্রকাশের ফলে তার কর্মজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।
পডকাস্টে সাফা কবির বলেন, “নিউজটি দেখার পর পুরোপুরি শকড হয়েছিলাম। কী হচ্ছে এটা, এমনটাই শুধু ভাবছিলাম। এটা কেমন নিউজ। এরপর আর কোনো আপডেট কেউ দিতে পারল না। কিন্তু এমন খবর প্রকাশের পর আমার ক্ষতি হয়ে গেল। মিডিয়ার তিন–চারটা মেয়েকে নিয়ে যে নিউজটা করল, তারা একটিবার চিন্তা করল না যে, এ মেয়েগুলোর জীবনের ভবিষ্যৎ কী হবে?”
এই খবর প্রচারের পর সাফা একের পর এক কাজ হারাতে থাকেন। সেই সময়ের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার খবরটি প্রকাশ করা হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে আমার চুক্তি করার কথা ছিল। কিন্তু এমন খবরের পর তারা সেটি বাতিল করে দেয়। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে, এটা শুধু একটা নিউজ। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তাদের কাছে এটা কীভাবে প্রমাণ করব? আমার কাছে প্রমাণ করার কিছুই ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “আমার সিনিয়র শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইছিল না কেউ। আমিও বুঝতে পারছিলাম সামাজিক মাধ্যমে এটা নিয়ে ঝড় চলছে।”
এই কঠিন সময়ে সাফার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শোবিজের কয়েকজন বন্ধু। তিনি বলেন, “সেই সময় আমার শোবিজের বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিশেষ করে তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল— আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান অনেক সহযোগিতা করেছে। সিয়ামও সেই সময় মানসিকভাবে পাশে ছিল। আমার এ বন্ধুরা অনেক সুন্দর। এখানে কাজ করে এত ভালো বন্ধু আমি পেয়েছি। অনেকেই বলেন— মিডিয়ার মানুষেরা বন্ধু হয় না, আমি এর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না।”
সাফা কবির আরও জানান, “না জেনে সামাজিক মাধ্যমে কোনো তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া যেমন উচিত নয়, ঠিক তেমনি প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী ধরে নেওয়াও অন্যায়। আমরা হুজুগে অনেক কিছু করে ফেলি। কিন্তু চিন্তা করি না— এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের জীবন বা সমাজে কী প্রভাব ফেলবে। আমাদের একটা পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে— এগুলো কি কেউ চিন্তা করে?”
তিনি আরও বলেন, “এমনিতেই মিডিয়াকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না। এ ধরনের খবরের কারণে মা-বাবার মনে ধারণা জন্মাল— তাদের সন্তানরা এখানে সুরক্ষিত না। তাদের এখানে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। আমার মনে হয়, যে কোনো কিছু করার আগে দুবার ভাবা দরকার।”