তারকা–সন্তান হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পথচলা শুরু করলেও নিজের পরিচয়টা নিজের শক্তিতে গড়ে তুলেছেন শ্রুতি হাসান। বাবা দক্ষিণ ভারতীয় কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসান, মা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সারিকা—তাঁদের ছায়া থেকে বেরিয়ে আজ তিনি দক্ষিণের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা। সামনে মুক্তি পেতে যাচ্ছে লোকেশ কঙ্গরাজ পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি **‘কুলি’**, ছবির প্রচারে এখন ব্যস্ত শ্রুতি।
সম্প্রতি ‘নবভারত টাইমস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শ্রুতি খোলামেলা কথা বলেন নিজের ভাবনা, জীবনদর্শন ও সমাজের নারী বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। বললেন, ‘পুরুষেরা নিজের মত বললে বলা হয় আত্মবিশ্বাসী, আর মেয়েরা বললে তাকে বলে অহংকারী। এই দ্বিমুখী আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। ছেলেরা যা করলে বাহবা পায়, মেয়েরা একই কাজ করলেই সমালোচনার শিকার হয়।’
তবে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিবাচক পরিবর্তনেরও আভাস পাচ্ছেন তিনি। শ্রুতি বলেন, ‘বৈষম্য কিছুটা কমেছে, কিন্তু মানসিকতায় এখনো অনেক পরিবর্তনের দরকার আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে অনেক সময় বলা হয়—“আর কতদিন কাজ করবেন? বিয়েটা কবে করবেন?” অথচ কোনো পুরুষ তারকার বেলায় এমন কথা কেউ বলেন না।’
নিজের ব্যক্তিত্ব ও সাহসী মনোভাব নিয়ে শ্রুতি জানান, বাবার মতো তিনিও সোজাসাপটা কথা বলতে ভালোবাসেন। ‘বাবা সত্য বলার জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু সত্য বলার মধ্যেই এক ধরনের স্বাধীনতা আছে। আমরা কাউকে খুশি করার জন্য নিজেদের পরিবর্তন করি না।’
শ্রুতি আরও বলেন, ‘পিতাজি একজন বড় সুপারস্টার, কিন্তু তাঁর মধ্যে যে বিনয় ও শিল্পবোধ আছে, তা দারুণ। তিনি ভাবেন না বক্স অফিস নিয়ে, ভাবেন শিল্প নিয়ে। আমি সেই চিন্তাভাবনাকেই অনুসরণ করি।’
বাবার পরিচয়ের সুবিধা স্বীকার করেও শ্রুতি বলেন, ‘হ্যাঁ, “হাসান” পদবির কারণে কিছু দরজা খুলেছে, কিন্তু আমার মা–বাবা কখনো কারও কাছে ফোন করে আমার জন্য কাজ চাননি। আমি শুরু থেকেই স্বনির্ভর ছিলাম। এখন আমি সেই ছায়াকে আর ভার মনে করি না, বরং আলো হিসেবে দেখি।’
শ্রুতি ছাড়াও ‘কুলি’ ছবিতে রয়েছেন দক্ষিণ ভারতের আরও তিন বড় তারকা—রজনীকান্ত, নাগার্জুন ও সত্যরাজ। ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী **১৪ আগস্ট**। একই দিনে মুক্তি পাবে হৃতিক রোশন, জুনিয়র এনটিআর ও কিয়ারা আদভানি অভিনীত ‘**ওয়ার ২**’। দুই ব্লকবাস্টার ছবির সংঘর্ষে জমজমাট হতে চলেছে চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসের বক্স অফিস।