বলিউডের পর্দায় যাদের রসায়ন কোটি দর্শকের মন জয় করেছে, সেই শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোন এবার আলোচনায় এক অভিনব কারণে। ভারতের রাজস্থানের ভরতপুরের বাসিন্দা কীর্তি সিং নামে এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন, যা চলচ্চিত্র জগৎ থেকে ভক্তমহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জুনে কীর্তি সিং হরিয়ানার সোনিপতের মালওয়া অটো সেলস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ২৩ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩ টাকায় একটি হুন্ডাই আলকাজার গাড়ি কেনেন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই গাড়িতে একাধিক প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বারবার ডিলারশিপের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো সমাধান পাননি। এমনকি গাড়িটি ফেরত বা টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফলে প্রতারিত বোধ করে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে ভরতপুরের মথুরা গেট থানায় শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন, হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনসো কিম, সিওও তরুণ গর্গ, এবং মালওয়া অটো সেলসের দুই কর্মকর্তাসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪০৬, ১২০বি এবং বিএনএস-এর ৩১২, ৩১৮, ৩১৬, ও ৬১ ধারায় নথিভুক্ত হয়েছে।
শাহরুখ ও দীপিকার নাম এফআইআরে যুক্ত হওয়ার কারণ তাঁরা হুন্ডাইয়ের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে গাড়িটির প্রচার করেছিলেন। কীর্তি সিং দাবি করেছেন, তাঁদের প্রচারণার উপর ভরসা করে তিনি গাড়িটি কিনেছিলেন, যা পরে ত্রুটিপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে। ভারতের কনজ্যুমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ২০১৯ অনুযায়ী, কোনো পণ্যের ভ্রান্ত বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণার জন্য ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরদেরও দায়ী করা যায়। এছাড়া, ২০২৩ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বলা হয়, সেলিব্রেটিরা যদি কোনো পণ্য সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালান, তবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।
শাহরুখ খান ১৯৯৮ সাল থেকে হুন্ডাইয়ের সঙ্গে যুক্ত, যখন তারা ভারতে সান্ত্রো গাড়ি লঞ্চ করে। দীপিকা পাড়ুকোন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন। দুজনেই ২০২৪ সালে হুন্ডাই ক্রেটার একটি বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে কাজ করেছেন।
বর্তমানে ভরতপুর পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনা শাহরুখ-দীপিকার ভক্তদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করলেও, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরদের জবাবদিহির বিষয়টি নিয়ে ভারতে আলোচনা আরও তীব্র হয়েছে।