বাঙালি কন্যা মৌনি রায় ২০০৪ সালে ‘রান’ ছবির একটি নাচের দৃশ্য দিয়ে বলিউডে প্রথম পা রাখেন। তবে অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ হয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কিউকি সাস ভি কভি বহু থি’-তে। এরপর একের পর এক টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যান। বিশেষ করে ভৌতিক থ্রিলার ‘নাগিন’ তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে যায়। সম্প্রতি জিও হটস্টারের ‘সলাকার’ ওয়েব সিরিজে দাপুটে গোয়েন্দা চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। প্রায় দুই দশকের বিনোদন জগতের যাত্রায় মৌনি প্রমাণ করেছেন তাঁর বহুমুখী প্রতিভা। তবুও ভালো চরিত্র পাওয়ার জন্য তাঁকে সংগ্রাম করতে হয়। সম্প্রতি এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি এই সংগ্রাম ও ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন।
অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান’-এ ‘জুনুন’ নামের খলনায়িকার চরিত্রে মৌনি দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। ‘সলাকার’ সিরিজে ‘সৃষ্টি চতুর্বেদী’ নামের গোয়েন্দা চরিত্রে তাঁর পরিমিত ও সাবলীল অভিনয়ও সমাদৃত হয়েছে। বারবার চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দেখিয়েছেন, তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি।
তবে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-এর সাফল্যের পরও মৌনিকে ভালো চরিত্র পাওয়ার জন্য কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি বলেন, “একজন বহিরাগত হিসেবে এই সংগ্রাম চলতেই থাকবে। আপনার শেষ প্রজেক্ট যত সফলই হোক, কাজ যত সমাদৃতই হোক, বহিরাগত হিসেবে এখানে একটি ভালো চরিত্র পাওয়া মুশকিল। বাইরে থেকে আসা মানুষদের অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাই আমি ছোট-বড় যে প্রস্তাব আসে, তার মধ্য থেকে ভালো কিছু বেছে নেওয়ার চেষ্টা করি।”
মৌনির মতে, ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে আসা মানুষেরা তুলনামূলকভাবে কম সুযোগ পান এবং কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হন। তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে আসা প্রতিভাবান অভিনয়শিল্পীদের সমানভাবে অডিশন দেওয়ার সুযোগ পাওয়া উচিত। আমি কখনো অডিশন দিতে পিছপা হই না।”
‘টাইপকাস্ট’ প্রথা নিয়ে মৌনি বিরক্ত। তিনি বলেন, কোনো অভিনয়শিল্পী যদি একটি নির্দিষ্ট ধরনের চরিত্রে সফল হন, তাঁকে বারবার একই ধরনের চরিত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ‘নাগিন’-এর পর তাঁকেও এইভাবে ‘নাগিন’ চরিত্রে বেঁধে ফেলা হয়েছিল। তবে ভিন্নধারার চরিত্রে অভিনয় করে তিনি এই শিকল ভেঙেছেন। ব্যতিক্রমী চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ক্রমাগত নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন।
আগামী দিনে আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত মৌনি রায়। বহিরাগত হিসেবে তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত থাকলেও, তিনি বিশ্বাস করেন, প্রতিটি নতুন চরিত্রই তাঁর জন্য নিজেকে নতুনভাবে প্রমাণের সুযোগ।