ভিমির জীবন শুরু হয়েছিল গানের তালিম দিয়ে, কিন্তু সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্ত তাঁকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে। কলকাতার ব্যবসায়ী শিব আগরওয়ালের সঙ্গে বিয়ে তাঁকে বিলাসবহুল জীবন দিলেও স্থায়ী হলো না। শিব তাঁকে ত্যাগ করেন, এবং বলিউডে তাঁর ক্যারিয়ারও ধীরে ধীরে ঝুঁকির মুখে পড়ে। বি আর চোপড়া তাঁকে ‘শিক্ষিত, দ্রুত শিক্ষণক্ষম ও বুদ্ধিমান’ বলে প্রশংসা করলেও ‘হামরাজ’-এর পর তাঁর কোনো ছবি সফল হয়নি।
১৯৭১ সালের পর ভিমি বলিউড থেকে কার্যত হারিয়ে যান। তিনি কলকাতায় ফিরে যান, যেখানে তিনি মদে আসক্ত হয়ে পড়েন এবং এক ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর জলির আশ্রয়ে থাকতে শুরু করেন। জলি তাঁকে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করেন, দাবি করে এটিই তাঁর ক্যারিয়ার পুনরুদ্ধারের একমাত্র পথ। টেক্সটাইল ব্যবসা শুরু করলেও দেনার দায়ে তা বিক্রি করতে হয়। মদে আসক্তি, হতাশা আর অপমান তাঁকে সম্পূর্ণ ভেঙে দেয়।
ভিমির মৃত্যুর পর তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয় নির্জনে। তাঁর দেহ ঠেলাগাড়িতে করে চিতায় নেওয়া হয়, এবং বলিউডের কেউ উপস্থিত ছিলেন না—শুধু ছিলেন সুনীল দত্ত। এমনকি মৃত্যুর পরও তাঁকে অপমান থেকে মুক্তি মেলেনি। ‘কৃষ্ণ’ নামের এক ব্যক্তি আনন্দবাজার পত্রিকায় তাঁর মৃত্যুকে ‘মুক্তি’ বলে কুরুচিকর মন্তব্য করেন।
মাত্র ১০টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ভিমি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘হামরাজ’, ‘আবরু’ (অশোক কুমারের সঙ্গে), ‘নানক নাম জাহাজ হ্যায়’ (পৃথ্বীরাজ কাপুর ও আই এস জোহরের সঙ্গে) এবং তাঁর শেষ ছবি ‘ক্রোধী’ (সুভাষ ঘাই পরিচালিত)। তাঁর জীবন শুধু একজন অভিনেত্রীর পতনের গল্প নয়, বরং নিঃসঙ্গতা, অপূর্ণ স্বপ্ন আর নির্মম বাস্তবতার এক হৃদয়বিদারক কাহিনি।