বাঁধন তার ইনস্টাগ্রাম স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “আমার জীবনের বেশিরভাগ শিক্ষা এসেছে না বই থেকে, না কারও উপদেশ থেকে—এসেছে কষ্ট, বিশ্বাসঘাতকতা আর অপমানের মধ্য দিয়ে।” তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ের অভিভাবকত্ব মামলা চলাকালে তার সাবেক স্বামী, তার কিছু সহকর্মী এবং একজন ফটোসাংবাদিকের সহায়তায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়। তিনি বলেন, “তারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা গল্প ছড়ায়, যেন প্রমাণ করতে পারে—আমি ‘খারাপ মা’ এবং ‘লজ্জাহীন নারী’। আমার ছবি ছাপানো হয় সর্বত্র, শিরোনামগুলো চিৎকার করে মিথ্যা বলে।”
অভিনেত্রী আরও জানান, এই কঠিন সময়ে যাদের তিনি আপন ভেবেছিলেন, তাদের অনেকে চুপ থাকলেও কিছু বিনোদন সাংবাদিক বন্ধু ও অচেনা শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেন, “সবচেয়ে কষ্টকর ছিল প্রকাশ্য চরিত্র হনন। সবচেয়ে বেশি ব্যথা দিয়েছিল বিশ্বাসঘাতকতা।” বাঁধন তার সাবেক স্বামী সম্পর্কে বলেন, “শুধু আমার স্বামী ছিল না, সে ছিল আমার সন্তানের বাবা। তবু সে আমাকে ধ্বংস করার পথ বেছে নিয়েছিল। আমি তাকে ভালোবাসতাম না, কিন্তু আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। আর সেই বিশ্বাসটাই সে নির্মমভাবে ভেঙে দিয়েছিল।”
বাঁধন আরও উল্লেখ করেন, এই ঘটনার পর তিনি এক বন্ধুর বাড়িতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তখন তার বন্ধুর স্বামী তাকে দুটি পথের কথা বলেন: একটি হলো রাগ ও হিংস্রতার পথ, আরেকটি হলো নীরবতা, সত্য ও আত্মসম্মানের মর্যাদাপূর্ণ পথ। তিনি বলেন, “আমি দ্বিতীয় পথটি বেছে নিয়েছিলাম। সহজ ছিল না। কিন্তু এটা আমাকে এক ধরনের শক্তি দিয়েছিল, যা আমার নিজের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।”
অভিনেত্রী জানান, এই অভিজ্ঞতার পর থেকে তিনি অপমান বা আক্রমণের জবাব দেন না। তিনি বলেন, “আমি তাদের হাতে কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া তুলে দিই না। আর এই নীরবতা—এই আত্মনিয়ন্ত্রণ—তাদের বেশি কষ্ট দেয়, যে কোনো কথার চেয়েও।” তিনি যোগ করেন, “যখন তারা এখনো নিজেদের ঘৃণা আর রাগে ডুবে থাকে, আমি তখন অনেক দূর এগিয়ে গেছি—শান্তি, স্পষ্টতা আর সম্মান নিয়ে।”
বাঁধনের এই স্ট্যাটাস তার ভক্তদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তার সাহস, সততা এবং মানসিক শক্তির প্রশংসা করেছেন। এই পোস্ট তার জীবনের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়ের গল্প বললেও তার নীরবতা ও আত্মমর্যাদার পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত তাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।