অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর জনপ্রিয় সিরিজ ‘পঞ্চায়েত’-এর চতুর্থ মৌসুম দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। সিরিজের অন্যতম প্রিয় চরিত্র ‘সচিবজি’র ভূমিকায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন অভিনেতা জিতেন্দ্র কুমার। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বালগন্ধর্ব রঙ্গমন্দির মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত’ তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে জিতেন্দ্র বলেন, “আজ ছোট থেকে বড় সবাই আমাকে ‘পঞ্চায়েত’-এর জন্য চেনেন। ইন্ডাস্ট্রির অনেকে এই সিরিজ দেখে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বার্তা পাঠিয়েছেন। এই সিরিজ আমার জন্য অনেক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এখন আমাকে মাথায় রেখে গল্প লেখা হচ্ছে, নির্মাতারা আমার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এই সিরিজ আমার জীবনে অনেক কিছু বদলে দিয়েছে।”
প্রথম মৌসুমে কাজ করা ছিল তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, “এখন আমি ‘সচিবজি’ চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছি। কিন্তু শুরুতে এই চরিত্রে ঢুকতে সময় লেগেছিল। প্রথম মৌসুমে প্রায় আট দিন ধরে নিজেকে চরিত্রের মধ্যে ঢালতে হয়েছে। তখন ‘অ্যাকশন’-এর চেয়ে ‘রিঅ্যাকশন’ বেশি দিতে হতো। রাগ, হাসি, আবেগ—সবকিছু প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে হতো। এখন এই চরিত্র গল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আর আমি এটি পুরোপুরি উপভোগ করি।”
চারটি মৌসুম ধরে জিতেন্দ্র বলিউড অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার সঙ্গে কাজ করেছেন। ‘পঞ্চায়েত’-এর পাশাপাশি ‘শুভ মঙ্গল জ্যাদা সাবধান’ সিনেমাতেও তাঁরা একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। নীনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “নীনা ম্যামের কাছ থেকে শিখেছি সেটে কীভাবে পরিস্থিতি সামলাতে হয়। তাঁর কাছ থেকে ভবিষ্যতেও আরও শিখতে চাই। নীনা ম্যাম আর রঘুবীর যাদব স্যারের আমি বড় ভক্ত।”
তবে একই ধরনের চরিত্রে বারবার অভিনয় করা নিয়ে জিতেন্দ্রর মনে খানিকটা হতাশা রয়েছে। তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা হলো, কোনো অভিনেতা যদি একটি চরিত্রে জনপ্রিয় হন, তাঁকে বারবার একই ধরনের চরিত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়। যতক্ষণ না তিনি ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, ততক্ষণ অন্যভাবে ভাবা হয় না।”
নতুন প্রজেক্ট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি গল্পের পটভূমি, নির্মাতাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং কাজের মাধ্যমে আনন্দ পাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমি দেখি গল্পের দুনিয়া কেমন, নির্মাতারা সেটা কীভাবে গড়েছেন এবং আমি সেখানে কাজ করে কতটা আনন্দ পাব। কখনো কখনো একই ধরনের চরিত্র হলেও গল্প বা পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হলে কাজটা উপভোগ্য হয়।”
বিনোদন জগতের পরিবর্তন নিয়ে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে জিতেন্দ্র বলেন, “সবকিছু খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি আসছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ না খাওয়ালে পিছিয়ে পড়তে হয়। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে নতুনকে গ্রহণ করতে হবে।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলিং নিয়ে তিনি বলেন, “ভালো-মন্দ দুই ধরনের মন্তব্যই পাই। তবে আমি কোনো মন্তব্যকেই বেশি গুরুত্ব দিই না। আমি সাধারণত কাজ–সংক্রান্ত পোস্টই করি, ব্যক্তিগত কিছু শেয়ার করি না। ব্যক্তিগত পোস্টে বাজে মন্তব্য হলে সেটা কষ্ট দিতে পারে। তাই ব্যক্তিগত জীবনকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আলাদা রাখি।”