১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ ছিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমা। এরপর থেকে প্রায় চার শতাধিক সিনেমা নির্মিত হলেও হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগই ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ। গত এক দশকে একটি সিনেমাও সফলতার মুখ দেখেনি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২টি সিনেমার জন্য ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ২০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য। গত ৫০ বছরে এই খাতে কয়েকশ কোটি টাকা ব্যয় হলেও বেশিরভাগ সিনেমা দর্শক টানতে ব্যর্থ।
কিছু সিনেমা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ ১৯৮০ সালে মস্কো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হয়। ‘গাড়িওয়ালা’ স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ২৬টি দেশের ৭৮টি উতসবে প্রদর্শিত হয়ে স্পেন ও টেক্সাস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কার জিতেছে। ‘মাটির প্রজার দেশে’ ২০১৮ সালে ২০টির বেশি আন্তর্জাতিক উতসবে অংশ নিয়ে শিকাগোর সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কার পায়। ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ২০১৬ সালে সার্ক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়।
তবে, গত কয়েক বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত অনুদানের সিনেমাগুলো ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ এবং সমালোচিত। ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ ও ‘লাল শাড়ি’ ব্যর্থ হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ‘১৯৭১ সেই সব দিন’, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ‘ছায়াবৃক্ষ’, ‘মেঘনা কন্যা’ ও ‘আহারে জীবন’ও ব্যর্থ। ২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দেয়ালের দেশ’ প্রশংসিত হলেও ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়নি। ‘শ্রাবণ জ্যোতস্নায়’ ও ‘দায়মুক্তি’ সমালোচিত হয়। ‘বলী’ আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রশংসিত হলেও প্রেক্ষাগৃহে সফল হয়নি। ‘জলরঙ’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই ওটিটিতে মুক্তি পায়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দর্শকের অনাগ্রহের কারণ গল্পের দুর্বলতা, নৈপুণ্যের অভাব, বিনোদনের কমতি, প্রচারণার ঘাটতি এবং প্রযুক্তিগত দুর্বলতা। অনুদানের সিনেমাকে শিল্পীকেন্দ্রিক বা উতসব-উদ্দেশ্যমূলক না করে দর্শকের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ ও প্রচারণা বাড়ালে সাফল্য সম্ভব।