Wednesday, July 30, 2025

শুটিংয়ের সময় ও পারিশ্রমিক জটিলতায় শিল্পীদের দুর্ভোগ: উত্তরায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

 টেলিভিশন নাটকের শুটিংয়ের সময়সীমা ও পারিশ্রমিক নিয়ে শিল্পী ও কলাকুশলীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ এখনো অমীমাংসিত। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শুটিং চলায় শিল্পীরা বিপাকে পড়েন, রাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাসায় ফিরতে হয়। এছাড়া, বাজেটের বড় অংশ প্রধান শিল্পীদের পারিশ্রমিকে চলে যাওয়ায় চরিত্রাভিনেতাদের জন্য থাকে সামান্য। দুই-তিন চরিত্রকেন্দ্রিক নাটকের প্রবণতায় অনেক শিল্পী কাজও পাচ্ছেন না, ফলে পরিবার নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন তারা।

এসব সমস্যা সমাধানে ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অরগানাইজেশন (এফটিপিও) নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল। এতে বলা হয়, শুটিং সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর অতিরিক্ত সময়ের জন্য অভিনয়শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, রূপসজ্জাকর, ক্যামেরাম্যান, লাইটম্যান, প্রোডাকশন ম্যানেজার, প্রোডাকশন বয়, মাইক্রোবাসের মালিক ও চালকদের অতিরিক্ত সম্মানি দিতে হবে। প্রযোজক, নাট্যকার ও পরিচালকদের চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশনাও ছিল। কিন্তু এসব নিয়ম বাস্তবায়ন হয়নি, ‘ম্যানেজ’ প্রক্রিয়ায় চলছে সব।

এদিকে, রাজধানীর উত্তরায় শুটিং হাউজগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত শুটিংয়ের অভিযোগে নতুন জটিলতা তৈরি হয়। উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে লাবণী-৪, লাবণী-৫ ও আপন ঘর-২ নামে তিনটি শুটিং হাউজ রয়েছে। গত ২০ জুলাই উত্তরা কল্যাণ সমিতি সেক্টর-৪ শুটিংয়ে জনসমাগম ও বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কারণে বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

লাবণী শুটিং হাউজের মালিক আসলাম হোসেন জানান, একজন পরিচালক রাতে মশাল নিয়ে মিছিলের দৃশ্য শুট করায় আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হন। ভিডিওর মাধ্যমে কল্যাণ সমিতি এটি জানতে পেরে শুটিং বন্ধের নির্দেশ দেয়। তিনি বলেন, “আমরা রাত ৯টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি, কিন্তু কম বাজেটের কারণে অনেকে এক-দুই দিনে শুটিং শেষ করতে গিয়ে রাত ২-৩টা পর্যন্ত গড়ায়।”

এই নিষেধাজ্ঞায় মিডিয়া পাড়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকে ধারাবাহিক নাটকের কন্টিনিউটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পরে কল্যাণ সমিতি ও শুটিংসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর বৈঠকে শর্তসাপেক্ষে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। শুটিং হাউজ মালিক সংগঠনের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, “আবাসিক এলাকায় কাজ করতে গেলে সতর্কতা প্রয়োজন। আমরা এ বিষয়ে সচেতন থাকব।”

নির্মাতা ও শিল্পীরা এবার নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সংগঠনগুলো দ্রুত নিয়মনীতি প্রণয়নের ওপর জোর দিচ্ছে, যাতে শুটিংয়ের সময়সীমা ও পারিশ্রমিক নিয়ে দুর্ভোগ কমে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.