প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনির প্রথম অস্কার মনোনয়ন পেয়েছে সিনেমা ‘পাপা বুকা’। ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমাটি ৯৮তম অস্কারে ‘বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে মনোনীত হয়েছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে সিনেমাটির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তিনি এই সাফল্য নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
ভারতীয় পরিচালক ড. বিজুকুমার দামোদরনের পরিচালনায় হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি এবং টক পিসিন ভাষায় নির্মিত এই সিনেমায় ঋতাভরীকে দেখা যাবে একজন ইতিহাস চর্চাকারীর ভূমিকায়। পাপুয়া নিউগিনির স্বাধীনতার ৫০তম বছরে এই সিনেমাটি তাদের প্রথম অস্কার প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
ঋতাভরী বলেন, “এই সিনেমাটি ভারত ও পাপুয়া নিউগিনির যৌথ প্রযোজনা। এতে তিনটি মূল চরিত্র রয়েছে—একজন মালয়ালি, একজন পাপা বুকা, আর আমি একজন বাঙালি চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমি বাংলায় কথা বলেছি, কারণ পরিচালক মনে করেছেন, বাংলায় লেখা একটি চিঠি পড়ার সময় অন্য ভাষায় পড়লে তার মর্ম হারিয়ে যাবে।”
তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পরিচালকের সঙ্গে তার আলাপ হয়। তখন মজা করে তিনি বলেছিলেন, “আমাকে সিনেমায় না নিলে কেরালায় গিয়ে খুন করে আসব।” পরিচালক সেই কথা রেখেছেন বলে হাসিমুখে জানান ঋতাভরী।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর সিনেমা মনোনীত হলেও, বাংলা সিনেমায় কি তাঁর উপস্থিতি কমছে? এই প্রশ্নের জবাবে ঋতাভরী বলেন, “আমি নিজেকে কোনো সীমায় বেঁধে রাখতে চাই না। আমি ভালো সিনেমা করতে চাই। আমি অনেক দক্ষিণী ও হিন্দি সিনেমার প্রস্তাব ফিরিয়েছি, কারণ সেগুলো মানসম্পন্ন ছিল না। হয়তো বড় প্রযোজক বা নাম হতো, কিন্তু শুধু প্রচারের জন্য সিনেমা করতে চাই না। তাতে আমার শিল্পের প্রতি অন্যায় হবে।”
তবে, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরে আমি যে কাজ পাচ্ছি, তার মূলে রয়েছে বাংলা সিনেমা।” পাপুয়া নিউগিনির মাটিতে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি জানান, সেখানে প্রকৃতির চ্যালেঞ্জ, খাবারের সমস্যা এবং ব্যক্তিগত ক্ষতির মধ্যেও কাজটি ছিল অসাধারণ।
‘পাপা বুকা’ সিনেমাটি পাপুয়া নিউগিনিতে ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ মুক্তি পাবে। এরপর আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে অস্কার প্রচারণার জন্য প্রদর্শিত হবে। ঋতাভরীর এই সাফল্য বাংলা সিনেমার জন্য গর্বের বিষয়।