Thursday, August 7, 2025

উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে বিপর্যস্ত ধরালী, সারা আলি খান-সহ বলিউড তারকাদের সমবেদনা

 উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ধরালী গ্রামে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট হড়পা বান ও ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বিপর্যয়ে কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, এবং প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ধরালী ও হর্ষিল উপত্যকায় মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বাড়ি, হোটেল, দোকান এবং রাস্তাঘাট তছনছ হয়ে গেছে। এই ঘটনায় বলিউড অভিনেত্রী সারা আলি খান, উর্বশী রাউতেলা-সহ বেশ কয়েকজন তারকা গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

সারা আলি খান, যিনি উত্তরাখণ্ডে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেদারনাথ’র শুটিংয়ের মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক করেছিলেন, এই অঞ্চলের সঙ্গে তার গভীর আবেগপূর্ণ সংযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালের কেদারনাথ বন্যার পটভূমিতে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের সময় তিনি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তিনি প্রায়ই কেদারনাথ মন্দিরে পূজা দিতে যান। এই বিপর্যয়ে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “উত্তরাখণ্ডের ঘটনায় যাদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। প্রত্যেকে যাতে এ মুহূর্তে শক্তি সঞ্চার করে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে, সেই প্রার্থনা করছি।” তিনি উত্তরকাশী জেলা জরুরি কেন্দ্রের জারি করা জরুরি নম্বরগুলো (০১৩৭৪২২২১২৬, ০১৩৭৪২২২৭২২, ৯৪৫৬৫৫৬৪৩১) শেয়ার করে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন।

একইভাবে, উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের মেয়ে অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলা এই বিপর্যয়ে গভীর বেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “হরিদ্বারের মেয়ে আমি। উত্তরাখণ্ডের প্রতিটি শ্বাসে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে নিজের আত্মার খোঁজ পাই। উত্তরকাশীতে যা ঘটল, সেটি দেখার পর নিজের অন্তরের বেদনা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।” তিনি উত্তরাখণ্ডের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে ত্রাণ কার্যক্রমে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া, অভিনেতা সোনু সুদ, ভূমি পেডনেকর, বিবেক ওবেরয়, আদিভি শেষ, রাঘব জুয়াল-সহ আরও অনেকে সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। সোনু সুদ এক্স-এ লিখেছেন, “উত্তরকাশীর বিধ্বংসী বন্যা ও মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হৃদয় ভেঙে গেছে। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত জীবনের জন্য প্রার্থনা। এখন সময় জাতির একসঙ্গে দাঁড়ানোর।” ভূমি পেডনেকর পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে যা ঘটছে তা হৃদয়বিদারক। অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রকৃতির এই রোষ।”

উত্তরকাশীর ধরালী ও সুখি টপ এলাকায় দুটি মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনায় ক্ষীরগঙ্গা নদী উপচে পড়ে, যার ফলে ২০-২৫টি হোটেল, হোমস্টে এবং ধরালী বাজারের বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। উদ্ধারকারী দল, যার মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, আইটিবিপি এবং স্থানীয় পুলিশ রয়েছে, কঠিন আবহাওয়া ও ভূখণ্ডের মধ্যেও ১৫০ জনকে উদ্ধার করেছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি দেহরাদুনের জরুরি কেন্দ্র থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করছেন।

এই বিপর্যয় ২০১৩ সালের কেদারনাথ বন্যা এবং ২০২১ সালের ঋষিগঙ্গা বিপর্যয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) উত্তরাখণ্ডের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.