চলতি বছরটা বলিউডের নবাব সাইফ আলি খানের জন্য মোটেও সুখকর নয়। বছরের শুরুতে নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হওয়ার পর এবার এলো আরও বড় ধাক্কা। ভারতের মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট গত শুক্রবার সাইফের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। ফলে পতৌদি পরিবারের উত্তরাধিকারসূত্রে দাবি করা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি এখন সরকারের অধিগ্রহণের মুখে।
**কী ঘটেছিল?** ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালে। মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করে, ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের সম্পত্তি ‘এনেমি প্রোপারটি অ্যাক্ট ১৯৬৮’-এর আওতায় শত্রু সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। এই আইন অনুযায়ী, এই সম্পত্তি বিদেশি সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে সরকারের অধীনে চলে যাবে। কারণ, নবাব হামিদুল্লাহ খানের জ্যেষ্ঠ কন্যা আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এই সিদ্ধান্তের জেরেই সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। **শত্রু সম্পত্তি আইন কী?** ১৯৪৭ সালে ভোপাল ছিল একটি প্রিন্সলি স্টেট, যার শেষ নবাব ছিলেন হামিদুল্লাহ খান। তিনি ছিলেন সাইফের বাবা মনসুর আলি খান পতৌদির মাতামহ। হামিদুল্লাহর তিন কন্যার মধ্যে বড় কন্যা আবিদা সুলতান পাকিস্তানে চলে যান। দ্বিতীয় কন্যা সাজিদা সুলতান ভারতে থেকে যান এবং সাইফের দাদা ইফতিকার আলি খান পতৌদিকে বিয়ে করেন। এর ফলে ইফতিকার আলি খান ওই সম্পত্তির আইনি উত্তরাধিকারী হন। ২০১৯ সালে আদালত রায় দেয়, সাজিদা সুলতান সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারী এবং তার নাতি সাইফ আলি খানেরও এই সম্পত্তিতে অংশ রয়েছে। কিন্তু আবিদা সুলতানের পাকিস্তানে চলে যাওয়ার কারণে সরকার এই সম্পত্তিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে দাবি করে। সম্প্রতি স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর থেকে এই সমস্যা নতুন করে প্রকট হয়েছে। **সাইফের বর্তমান অবস্থা** এই আইনি লড়াইয়ে সাইফ আলি খানের হাতে এখন আর কোনো পথ খোলা নেই বললেই চলে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে পতৌদি পরিবারের এই বিপুল সম্পত্তি সরকারের হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই ঘটনা সাইফের জন্য কেবল আর্থিক ক্ষতিই নয়, পারিবারিক ঐতিহ্যের উপরও বড় ধাক্কা।