Monday, July 21, 2025

বেলুচিস্তানে ‘সম্মান রক্ষার’ নামে দম্পতি হত্যা: ভাইরাল ভিডিওতে ক্ষোভের ঢেউ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ‘সম্মান রক্ষার’ নামে এক দম্পতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে মরুভূমিতে নিয়ে গিয়ে দম্পতিকে নৃশংসভাবে হত্যার দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারকা ও সাধারণ মানুষ। তারা সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক বার্তায় এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই সমাজ নারীদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে এবং মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সোমবার (২১ জুলাই) জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

গত মাসে বেলুচিস্তানের দাগারি অঞ্চলে একটি স্থানীয় উপজাতীয় জির্গার আদেশে এই দম্পতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটার উপকণ্ঠে অবস্থিত এই অঞ্চলে ঘটনাটি সংঘটিত হয়। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, একদল পুরুষ একটি গাড়ি থেকে দম্পতিকে নামিয়ে মরুভূমির দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেখানে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।

অভিনেত্রী হানিয়া আমির ইনস্টাগ্রামে একটি শক্তিশালী বার্তা শেয়ার করে পাকিস্তানে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি লিখেছেন, ‘যদি নারীরা সম্মানের জন্য হত্যা শুরু করে, তাহলে কোনো পুরুষ বেঁচে থাকবে না।’ অভিনেত্রী তমকেনাত মনসুরও এই হত্যাকাণ্ডের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সমাজ নারীদের ঘৃণা করে।’ এই মন্তব্যগুলো সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অভিনেতা নওমান ইজাজসহ আরও অনেক তারকা হৃদয়স্পর্শী বার্তায় এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক’ এবং ‘মানবতার প্রতি গভীর বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মডেল হিরা খান নিহতদের জন্য প্রার্থনা করে বলেন, ‘আমরা তোমাদের এবং আরও অনেককে ব্যর্থ করেছি।’ এই বার্তা দেশে ক্রমবর্ধমান ‘সম্মান রক্ষার’ নামে হত্যাকাণ্ডের বাস্তবতাকে সামনে আনে। র‍্যাপার তালহা ইউনুস (যং স্টানার্স) তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে এই ঘটনার সংবাদ শেয়ার করেন।

২০২৪ এবং ২০২৫ সালে পাকিস্তানে ‘সম্মান রক্ষার’ নামে একাধিক নারীর জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত ধারণা থেকে এই হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হচ্ছে, যেখানে কিছু কাজকে ‘অসম্মানজনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৩৪৬ জন মানুষ এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

এদিকে, আরও অনেক তারকা ও বিশিষ্ট ব্যক্তি এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করছেন। বিষয়টি এখনো বিকাশমান রয়েছে।

Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.