Saturday, August 23, 2025

নলিনী জয়বন্ত: বলিউডের উজ্জ্বল তারকার করুণ নিঃসঙ্গ জীবন ও মৃত্যু

 ১৯৫০-এর দশকে বলিউডের ঝলমলে জগতে নিজের অসাধারণ সৌন্দর্য ও অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলেন নলিনী জয়বন্ত। ফিল্মফেয়ার সাময়িকীর এক জরিপে তাঁকে সে সময়ের সবচেয়ে সুন্দরী অভিনেত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৭০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করে আলোচিত এই অভিনেত্রীর জীবনের শেষ পর্ব অবশ্য ছিল করুণ ও নিঃসঙ্গ।

মাত্র ১৪ বছর বয়সে নাচ ও অভিনয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকে নলিনী জয়বন্ত চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। তাঁর প্রতিভা নজর কাড়ে প্রযোজক চিমনলাল দেশাইয়ের। তিনি ১৯৪১ সালে নলিনীকে ‘রাধিকা’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন। অনেকে মনে করেন, সৌন্দর্য ও প্রতিভার দিক থেকে তিনি সমসাময়িক কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। ‘সমাধি’, ‘নাস্তিক’, ‘মুনিমজি’, ‘হাম সব চোর হ্যাঁ’, ‘কালা পানি’—এর মতো ছবিতে তাঁর অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছিল। এমনকি দিলীপ কুমারের মতো কিংবদন্তি অভিনেতাও তাঁর প্রশংসা করে বলেছিলেন, “আমি যতজন অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি, তিনি সেরাদের মধ্যে সেরা।”

নলিনীর পেশাগত জীবন যতটা উজ্জ্বল ছিল, ব্যক্তিগত জীবন ততটাই চ্যালেঞ্জিং। তিনি দুইবার বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে পরিচালক বিরেন্দ্র দেশাইকে বিয়ে করেন, যিনি ছিলেন প্রযোজক চিমনলাল দেশাইয়ের সন্তান। বিচ্ছেদের পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন অভিনেতা প্রভু দয়ালকে। তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল, কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে প্রভুর মৃত্যু নলিনীকে একা ও বিধ্বস্ত করে ফেলে।

স্বামীর মৃত্যুর পর নলিনী সমাজ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তিনি খুব কমই বাড়ি থেকে বের হতেন। এই নিঃসঙ্গ জীবন তাঁর শেষ দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর নলিনী জয়বন্ত মারা যান। তাঁর মৃতদেহ তিন দিন পর আবিষ্কৃত হয়। পুলিশ বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে, তখন পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

নলিনী জয়বন্তের জীবন ও কর্ম বলিউডের সোনালি দিনের এক অমলিন স্মৃতি। তাঁর অভিনয় দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী হয়ে থাকলেও, তাঁর নিঃসঙ্গ জীবন ও করুণ মৃত্যু শিল্পীজীবনের পেছনের কঠিন বাস্তবতার এক চিত্র তুলে ধরে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.